পিয়াসী

বিকাল থেকে আজ আকাশটি, কেন  যে এমন কালো মেঘে ঢেখে রেখেছে, সেটাই ভাবছি বার বার জ্বানালার পাশে বসে।
 মাঝে মাঝে কালো মেঘের বুক চিঁড়ে বেরিয়ে আসছে ঝিরঝিরি সাদা মুক্তের ন্যায় জলের ফোঁটা।
এই মেঘলা-বাদল বৃষ্টির দিনে , ধ্যাত !
একদম আর বেড়াতে ইচ্ছা করছে না , কি যে করি , ধুর ...শেষ-মেস টিক করলাম বৃষ্টি হয় হোক , আমি বেরাবই ।
তাই তাড়াহুড়ো করে রান্না চাপিয়ে দিলাম, ভাত আর আলু সিদ্ধ ,এবং দুপুরের তরকারী আছে মুরগির মাংস ।
রান্না চাপিয়ে স্নান টা করে নিলাম । তারপর ঘর-টর গুছিয়ে , জমিয়ে খেয়ে-দেয়ে , রাত ৮.৩০ - ৯ টার  দিকে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পরলাম । এই ৯ টার সময়ই রাস্তায় লোকজন একদম কম ,আকাশে কালো মেঘ , মাঝে মাঝে গ্রুম্গ্রুম আওয়াজ বার বার যেনো বুকের ভিতর টা কাঁপিয়ে দিচ্ছে ভয়ে । বেরিয়ে ভুল কাজ করলাম না তো , না এইসব না ভেবে বেরিয়ে পরেছি যখন তখন আর কি , যা হয় হবে ।
মেন রাস্তায় গিয়ে একটি বাস ধরলাম , তখন ও হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছে , মিনিট ১০ লাগে যেতে , তারপর নেমে আরো ৫ মিনিট হেঁটে সেই অভিশপ্ত বাস স্টান্ডে পৈাছালাম ।
হায়রে হতো ভাগী আমি ! তখন থেকেই বকবক করছি ,
কিন্তু আমি কে সেটাই তো বলা হয়নি । আমি, পিয়াসী গো পিয়াসী , রাতের অন্ধকারের পিয়াসী , এই বাস স্টান্ডের পিয়াসী ।
আমাকে তুমি চেনো না ? আমি খ্যাপা নাকি , তুমি চিনবে কি করে , তুমি তো ভাদ্র লোক, রাতে এদিক দিয়ে তো তুমি আসো না ।
তোমার আর দোষ কি করে দেই বাপু ! যাইহোক
এবার বুঝতে পেরেছ আমি কে ! তুমি টিকই বুঝেছো আমি ওই পিয়াসী , যে রাতের অন্ধকারে নরখাদক গুলোর পিয়াস মিটিয়ে বেড়ায় কিছু টাকার বিনিময়ে !
বিশ্বাস করো ইচ্ছা করে বিজলি থেকে পিয়াসী হয়নি , আমাকে বাধ্য করেছে আমার হারাম জাদা সতবাপ , সেই দিন টানতে টানতে আমাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ছিল এই বাস স্টান্ডের গোঁড়ায় , থাক সে কথা । অন্য একদিন না হয় বলবো সে কথা ।
বৃষ্টি একটু কমেছে কিন্তু আকাশের মেঘ যেনো আরো গারো কালোয় পরিনত হচ্ছে  !
কে জানি আজ কোনো কাস্টমার পাব কি না , না পেলে মায়ের দিব্বি করে বলছি ,
এমন বালের মতো দিনে আর বার হবো না কোনো দিন ।
দেখি লালু বুড়ার দোকানে যায় ....

আমি - এই বুড়া একটা পান  দে তো , বেশি করে দে সব কিছু একটু ।
বুড়া - কি রে পিয়াসী , তুই আজকে দিন ও ঘরে থাকতে পারলি না ?
আমি - কি করবো বুড়া বল , আমি যে মদ্দা মানুষ গুলোর কষ্ট সহ্য করতে পারি না ,( এই বলে একটা হাসি দিলাম) ।
বুড়া - বাপরে বাপ , তোকে তো দেখছি কত দিন ধরে তুই সব মদ্দা মানুষ গুলোর কষ্টে মলম লাগাচ্ছি , আজ আর তোর কপালে কেউ জুটবে বলে মনে হচ্ছে না  , এক আজ করিস কাউকে না পেলে , আমাকে বলিস , এই বৃষ্টি দিনে খুব ইচ্ছে করছে , আজ আমার ও একটু পিয়াস মিটিয়ে দিস ।
আমি - ওরে বুড়া.. , তোর সখ তো কম না , মুরদ আছে আমাকে পাওয়ার , শালা বুড়ার ব্যাটা বুড়া কথা না বলে প্যান দে তুই ।
বুড়া - এই পানের  টাকা দিয়ে যা ।
আমি - তোর পানের  টাকা তোর বাপের কাছ থেকে নিয়ে নিবি বুড়া কোথাকার ।( এই বলে আমি আবার বাস স্টান্ডে এসে দাঁড়ালাম )
বুড়া - থু তোর মতন বেশ্যার মুখে ....করে বেশ্যগিরি , তার আবার বুড়া- জওয়ান !
....
কি  জ্বালায় পরলাম রে বাবা , ঐতো একটা গাড়ি আসছে , দেখি থামে কি না !,,,,,,
আমি -চিৎকার করতে লাগলাম , বাবু বাবু ,,আমাকে একটু নিয়ে যান না আপনাদের সাথে !
ড্রাইভার -  ..ওরে পিয়াসী, বস তো তোকে নিতেই এসেছে , এই বৃষ্টিতে বস এর মুড আজ খুব ভালো , তারাতারি উটে পর ।
আমি শুনে খুশি হয়ে গাড়িতে উটে পরলাম , তারপর গাড়ি স্টার্ট করলো ,বাবু আমাকে জড়িয়ে ধরল , আমার স্তন্যে হাত দিয়ে চাপতে লাগলো , না না , তোমরা ভাদ্র লোক এই সব কথা কেন শুনবে !না থাক আর বলছি না ।
গাড়ি চলতে লাগলো হাই ওয়ে দ্রুত গতিতে ,
গাড়ির মধ্যে বাবু মদ আর আমাকে নিয়ে মাতলো এক দানব খেয়াল ,বাবু আমার চুল গুলল শক্ত করে ধরে একবার নামালো আর একবার উটালো ,,
আমি গুমড়ে উটে ,বাবুকে বললাম ,,লাগছে তো । চুল টা ছাড়ুন না দয়া করে !
বাবু - (গালি দিয়ে বলল ) ,,,মাগী টাকা নিবিতো, টাকা কি এমনি আসে , কষ্ট না দিয়ে তোকে টাকা এমনি দিয়ে দেবো ।
কথা শুনে আমার চোখে অশ্রু জলে সিক্ত হলো ,
আমি বাধা দিতেই বাবু আমাকে থাপ্পর মারতে শুরু করলো , আর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে , শেষ -মেস, বাবুর সাথে আমার হাতাহাতি শুরু হয়ে গেল  ,
খানিক বাদে  হাই ওয়ের ধারে , ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে আমাকে ধাক্কা মেরে নামিয়ে দিলো,
যাওয়ার সময় শুয়ারের বাচ্চা  মুখোশ পড়া ভদ্রলোক আমার মুখের উপর খানিক টাকা ছুড়ে দিয়ে বললো - যা মাগী দূর হ ।
কথা টি শুনে আমার বুক ফেটে , আমি ও তো মানুষ , আমারও তো কষ্ট হয় ,দুচোখ দিয়ে অঝোরে ঝরতে লাগলো জল ।আমার কষ্টের কোনো দাম নেই এই মুখোশ পড়া ভদ্র মানুষ গুলোর কাছে , তাই আকার কষ্ট একাই বুঝি । কিন্তু ,
এই অন্ধকারে আমি এখন কোথায় যাবো , একটা গাড়িও তো দেখছি না ,তখন শরীর এর কষ্টের থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে আমার মনে , নিজের উপর , নিজের মায়ের উপর আজ প্রচন্ড ঘৃনা হচ্ছে আমার , যে মা , আমার কথা না ভেবে আমার সাতবাপের অত্যাচারে গলায় দঁড়ি দিয়ে ঝুলে পরেছিল ঘরের সেলিং ফ্যান এ ।সেই ঝুলে থাকা আমার মায়ের দেহ , আমার ওই পশুর মাঝে বেড়ে উটা , তাদের রাতের ক্ষুধার খাবার হওয়া , সব কিছুই আজ আমার কাছে তীব্র যন্ত্রণাদায়ক ,তা কোনো ভাষায় প্রকাশ করার মতো না ।
উফ: কেন যে আজ বার হলাম , আজ কপাল তাই খারাপ ,
ধ্যাত ! কি করে এখন বাড়ি ফিরবো , দেখি কোনো গাড়ি পাই কি না !
মিনিট ১০ অপেক্ষা করার পর ,
ঐতো একটা গাড়ি আসছে , যাই হাত দেখায়,,,
please একটু নিয়ে যাবেন আমাকে .হেল্প মি ,,হেল্প মি .(বলতে বলতে আমি হাত নাড়াতে লাগলাম ,,,,)
গাড়িটি  না দাঁড়িয়ে আমার পাশ দিয়ে গিয়ে হাই ওয়ে এর নিচের রাস্তার একটি গাছে ধাক্কা মারলো ,,
আমি হতভাম্ব, আমি রুদ্ধাসাশ  হয়ে গাছের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম ,,
কি হলো , বুঝে উটার আগেই আমি ছুঁটতে  শুরু করলাম প্রানপনে গাড়ির দিকে কোনো কিছু না ভেবেই ,যখন গাড়ির কাছে পৈাছালাম ,,
গাড়ির ভিতর এর দিকে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই ,
আমি বড় বিস্মিত হয়ে গিছিলাম তখন, মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল শালা গেলো কোথায় সব ।
তার পর কানে এলো  গুন্ড়ানো অত্তনাদের আওয়াজ ,, আমি সেই দিকে তাকিয়ে নিজেকে হারালাম এক ফেলে আসা স্মৃতির মাঝে , একটি মেয়েকে ৩ শয়তান টানা হিছরা করে বনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে , আমি কোনো কিছু না ভেবেই চিৎকার করতে লাগলাম ,,
কেউ কি আছেন ,,কেউ কি আছেন ..পাগলের মতো চিৎকার করছি ,না কেউ কোনো সাড়া দিচ্ছে না ।
ভয়ে আমার সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল , আমি কি করবো ,আমার তখন পুরো বন্ধ হয়ে গেছে কোন কিছুই ভাবতে পারছিনা ।
কিছু পরে বুঝলাম কেউ নেই চারিপাশে ,যা করতে হবে তাআমাকেই করতে হবে , এই ভেবে  আমি ওদের দিকে ছুঁটে গেলাম , ততক্ষণে ৩ জানোয়ার মেয়েটির পরণের খাপড় ছিঁড়ে একাকার করে দিয়েছে ,,মেয়েটি এই বদ্ধ নরকীয় যন্ত্রণা থেকে নিজেকে বাঁচাবার আপ্রাণ অসাদ্ধ্য চেষ্টা চলিয়া যাচ্ছে ।এই দেখে সব ভয় যেনো কোথায় হারিয়ে গেল আমার।
আমি সাহস করে মেয়েটির ওপরে থাকা হারামজাদা কে এক ধাক্কা মারলাম , আর মেয়েটিকে আগলে নিলাম আমার বুকে , ,,
আমি - হারামজাদা  শুয়োরেরবাচ্চা গুলো , আর এক পা এগো বি না বলে দিচ্ছি কিন্তু  ,
চিৎকার করে কিন্তু মানুষ  জড়ো করবো ,,,(এই শুনে ওরা)
জানোয়ার গুলো - এক বৃকৎ হাসিতে ফেটে পড়ল , ওরা জানে এই বৃষ্টি বাদল দিনে আর এদিকে কেউ আসবে না ।
দুজন আমাকে টানতে লাগলো ,আর একজন মেয়েটিকে ,ছোট্ট মেয়েটি আমাকে প্রানপন ভাবে জড়িয়ে কাঁন্না করতে লাগলো ,
বার বার বাঁচাও , আমাকে বাঁচাও দিদি ,আমাকে এদের হাত থেকে বাঁচাও ,তার বুক ফাঁটা আর্তনাদ শুনে আমারও চোখ দিয়ে অঝর ঝরে ঝরছে জল ,
আমি শান্তনা দিলাম  কিছু হবে না মামনি , কিছু হবে না ! আমি আছি তো , তুই ভয় পাস না ।
জানোয়ার গুলো - আমাকে জোরে এক টানে আলাদা করে দিলো মেয়েটি থেকে ,
আমি সেই ধাক্কায় গিয়ে পরলাম কিছুটা দুরে , ওরা দুজন মেয়েটির উপর ঝাপিয়ে পড়ল আর একজন আমার ওপর হিংস্র পশুর মতো ঝাপিয়ে পড়ল ,
মেয়েটির আর্তনাদ আমার কান হয়ে বুকে গিয়ে লাগছিল , হে ঈশ্বর , তুমি বাঁচাও এই নিস্পাপ মেয়েটিকে , তুমি রক্ষে করো । এর  জন্য তুমি এই পাপী কে তুলে নিও , তুমি ওকে রক্ষে করো ভগবান !
তখনি আমার হাতে যেন পাথরের  স্পর্শ হলো ,সেই ইট টি ভগবানের দ্যান মনে করে  আমি শক্ত করে জাপটে ধরলাম,তারপর আমার ওপরে থাকা জানোয়ার এর মাথায় দিলাম এক ঘা,শালা হারামজাদা , নে এবার ,নে নে মেয়েদের দেহ এত প্রিয় ,নিজের দেহকে বাঁচা পারলে , আমার পুরো গা রক্তে ভিজে গেলো,
আর দেরী না করে আমি ওকে পাশেই দিলাম ফেলে , তারপর যতোটা পারি সাহস নিয়ে ওদের উপরে ঝাঁপিয়ে পরলাম,পিছন থেকে এক কুলাঙ্গার এর  মাথায় দিলাম পাথরের ঘা ,মাথা ধরে সেও ধীরে ধীরে লুটিয়ে পড়ল মাটিতে , আমি যেনো কোথাও হতে শক্তি পারছি ,আমি কিছুই বুঝতে পারছি না  আমার কি করে এইসব করছি ।
এদিকে  শালা কুত্তার বাচ্চা আর একটি দেখি  গাড়ির দিকে ছুঁটতে  লাগলো ,
আমি ইট ফেলে  মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরলাম শক্ত করে আমার বুকের মাঝে , মেয়েটি জোরে জোরে  চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো , হটাৎ  ই আমাকে সরিয়ে দিয়ে পাথর টি হাতে তুলে পাশে পরে থাকা জানোয়ার টির  মাথায় বার বার মারতে লাগলো , আর  চিৎকার করে বলতে লাগলো , তোদের মতো জানোয়ার দের এ পৃথিবীতে কোন জায়গা নেই , কোনো জায়গা নেই ,তোরা মানুষ হতে পারিস না ,, না না তোরা মানুষ হতে পারিস না ।
এই দেখে আমিও হাওমাও করে কেঁদে ফেললাম ,,
ওকে জড়িয়ে ধরলাম ,মামনি ছাড় ওকে , আর মারিস না ও আর বেঁচে নেই রে মামনি । ছাড় ওকে ছাড় !
মামনি আর কাঁন্না করিস না , সব টিক হয়ে যাবে , চল আমাদের কে এখুনি এখান থেকে যেতে হবে , চল ! তারাতারি চল , মামনি !
তারপর আমি মেয়েটিকে আগলে নিয়ে হাই ওয়ে এর দিকে আসতে লাগলাম,
হটাৎই  বিকৎ  আওয়াজ এ কেঁপে উটলো চারিপাশ আমার , কি হলো আমি মেয়েটির দিখে তাকালাম ,
ওকে জিজ্ঞাসা  করার আগেই ,চারিপাশের অন্ধকার  যেনো আমাকে চেপে ধরছিলো ,আমার মাথাটি কেমন যেনো ঝিমঝিম করছিল ,
তারপর দেখলাম  আমার বুক দিয়ে অঝোরে রক্ত বেয়ে পড়তে লাগলো ,এই দেখে  মেয়ে টি আমাকে জড়িয়ে হাওমাও করে কাদঁতে লাগলো ।
আমি তার হাত ধরে  ধীরে ধীরে মাটিতে লুটিয়ে পরলাম , তারপর আফসা আফসা দেখলাম ,, চলে যাওয়া বেজন্মা কুলাঙ্গারটি পিস্তল হাতে আমাদের দিকে আসছে ,
মেয়েটির আবার কাঁন্না দেখে , আমার উপর যেনো পুরো পৃথিবী ভেঙ্গে পড়ছিল তখন  ,চারিপাশ যেনো আমাকেই দেখছিল , মেয়েটির আর্তনাদ যেনো আমাকেই দ্বায়ী করেছিল বার বার , এই রাতের অন্ধকার যেনো আমার বাথ্যতায় পরিহাস করছিল ।
কুলাঙ্গারটি মেয়েটির চুলের মুঠো ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলো গাড়ির দিকে ,,
চারিপাশের বৃষ্টি ভিজা অন্ধাকর আমাকে আরো যেনো বেশি করে জাপটে ধরছিল ।
আমার ভগবান , আমাকে আর ! আর.. একটু শক্তি দাও ,আমাকে আর একটি বার উটে দাঁড়াবার সাহস দাও ,
আমি আর তোমার কাছে কোনো কিছু চাইব না , আমাকে এই নিস্পাপ মেয়েটিকে বাঁচাতে দাও , ভগবান !
অনেক কষ্ট করে উটে দাঁড়ালাম আমি, শেষ সম্বল রক্ত মাখা পাথরটিকে আবার জাপটে ধরলাম থর থর কাঁপতে থাকা হাতে ,,
না আমার এখনি মরলে চলবে না ,,এক উদম্ম বলের জোরে ঝাঁপিয়ে পরলাম কুলাঙ্গারটির ওপর , মাথায় দিলাম সজোরে পাথরের বারি বেশ কয়েক বার..
তারপর  আমাদের সামনে লুটিয়ে পড়ল শালা কুলাঙ্গারটি ,,
আঃ কি শান্তি ! আমি আর পারছি না , আমার শরীরের ভার যেনো হটাৎ করে অনেক বেশি , অনেক বেশি মনে হতে লাগলো , আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না , কেন মামনি ।
আমাকে একটু মাটিতে বসতে দে , বৃষ্টি ভিজা মাটি আজ কেন জানি না অনেক বেশি আপন মনে হচ্ছে ।
আমাকে একটু মাটিতে শুতে দে , কেন যে আজ এত ক্লান্ত লাগছে নিজিকে , এই পিয়াসী আজ কেন এত ঘুমের পিয়াসী হচ্ছে ।
আমাকে রেখে ওই বেজন্মাকে একে বারে শেষ করে দে মামনি ।
মেয়েটি পিস্তল টি নিয়ে কুলাঙ্গারটির ওপর সব গুলি খালি করে দিলো , তারপর হাওমাও করে কাদঁতে কাদঁতে আমাকে জড়িয়ে ধরল ।
আমি আর পারছিনা , আমার চোখে যেনো আলো ফুরিয়ে আসছে ,বৃষ্টিতে পুরো শরীর ভিজে গেছে , গায়ে কাদা মাখা , আমার সোনার অঙ্গ আজ লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে ।
 কোনো মতে কষ্ট-মোস্ট করে মেয়েটি কাঁন্না করতে করতে আমাকে নিয়ে গাড়িতে এলো ।
গাড়িটি স্টার্ট দিলো ,,হাই ওয়ে উটে দ্রুত গতিতে চলতে লাগলো গাড়িটি ।
আহঃ কি  শান্তি  আজ ,আমার কাছে যেনো আজ প্রকৃতি ধরা দিয়েছে তার আপন রূপে , সকালে যে বৃষ্টি আমার কাছে এতো অসহ্যকর মনে হচ্ছিল ,সেই বৃষ্টি এখন যে এতো প্রিয় এতো মুগ্ধকর মনে হবে ভাবিনি কখনো ।
সেই দিনের সেই ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটি তার মাকে বাঁচাতে পারিনি তার সতবাপের হাত থেকে ,সে বাঁচাতে পারিনি নিজিকে তার সতবাপ , তার সতবাপের বন্ধুদের হাত থেকে নিজেকে , সেই যন্ত্রণা বয়ে বেরিয়েছি এতো বছর , আজ সেই যন্ত্রণা থেকে যেনো মুক্তি পেলাম ,,
আজ যেনো আমার সব পাপ ঠাকুর ধুয়ে মুছে একাকার করে দিয়েছে , আজ আমি মুক্ত ।
আহঃ কি শান্তি আজ বাতাসে , এখন বৃষ্টিকে বড় মধুর মনে হচ্ছে ,
কিন্তু সব কিছু এমন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে কেন ,,সব কিছু কেন ঘুরছে ...
ওই তো আমি আমার মা কে দেখতে পারছি আমি ,,
আমার মা আমাকে ডাকছে ,,আমি মায়ের কলে কতদিন যে মাথা রেখে ঘুমই নি ,কতদিন আমার মায়ের হাতে ভাত খায়নি !
আমাকে যেতে হবে , আমাকে যেতে হবে ,, আমার মায়ের কাছে ,,আমাকে যেতে হবে ,,আমার মায়ের কাছে !

.............................সমাপ্তি..................................................ধন্যবাদ।

Comments

Popular Posts